প্রকাশ :
২৪খবরবিডি: 'ট্রেনের টিকিট কাটতে নানা বিধি-নিষেধ, তদারকির পরও থেমে নেই কালোবাজারি। মূলত টিকিট কাটার পুরো প্রক্রিয়া রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বরতরাই জড়িত এই কালোবাজারি সিন্ডিকেটে। এই চক্রটি বিভিন্ন কারসাজি করে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে দেড় থেকে দ্বিগুণ দামে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে থাকে। আর ঈদের ছুটিসহ বিভিন্ন ছুটিকে কেন্দ্র করে কালোবাজারিরা ৩-৪ গুণ পর্যন্ত বেশি দামে টিকিট বিক্রি করে। বাড়তি লাভের ৫০ শতাংশ পায় সরাসরি সিন্ডিকেটে জড়িত সদস্যরা। আর বাকি ৫০ শতাংশ চলে যায় কাউন্টারে থাকা বুকিং কর্মচারী ও তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সহজ ডটকমের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইটি বিশেষজ্ঞদের হাতে। যাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় শুধুমাত্র দুটি সিন্ডিকেটের হাতেই প্রতিদিন চলে যাচ্ছে প্রায় ৫০০ টিকিট।'
'খন্দকার মঈন বলেন, সেলিম ও উত্তমের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা উপযুক্ত সময় বুঝে সংগ্রহকৃত টিকিট নিয়ে রেলস্টেশনের ভেতরে অবস্থান করে। রেলস্টেশনে এসে টিকেট না পাওয়া সাধারণ যাত্রীদের কাছে তারা টিকেট বিক্রির জন্য ঘুরাঘুরি করেন এবং অধিক মূল্যে টিকেট বিক্রি করে থাকেন। এছাড়াও ট্রেন ছাড়ার সময় যতো ঘনিয়ে আসতে থাকে তাদের মজুদকৃত কালোবাজারি টিকিটের দাম তত বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। সুযোগ বুঝে অনেক ক্ষেত্রে টিকিটের দাম দিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে দেয়। র্যাবের এই কমান্ডার বলেন, ঈদের ছুটিসহ বিভিন্ন ছুটিকে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তাররা প্রতিটি টিকিট ৩-৪ গুণ বেশি মূল্যে বিক্রয় করে থাকে। সাধারণত প্রতিটি টিকিট তারা দেড় গুণ থেকে দুই গুণ বেশি দামে বিক্রি করে থাকে। এই লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ গ্রেপ্তাররা নিতো এবং বাকি ৫০ শতাংশ কাউন্টারে থাকা বুকিং কর্মচারী ও তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সহজ ডটকমের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইটি বিশেষজ্ঞদের দেওয়া হতো। গ্রেপ্তার উত্তম ও সেলিম সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন যাবত টিকেট কালোবাজারির মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা'।
'যেভাবে টিকিট যেত সিন্ডিকেটের হাতে'-
'র্যাবের মুখপাত্র বলেন, গ্রেপ্তার সেলিম দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছর ধরে টিকেট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তিনি কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি সেলিম সিন্ডিকেটের মূলহোতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় টিকিট কালোবাজারির দায়ে ৭টি মামলা রয়েছে এবং এসব মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগও করেছেন। তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও টিকিট কালোবাজারিতে জড়িত হন। গ্রেপ্তার মো. আনোয়ার হোসেন ওরফে কাশেম প্রায় ১৫ বছর ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তিনি সেলিমের অন্যতম প্রধান সহযোগী। মূলত তার দায়িত্ব ছিল কাউন্টার থেকে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করা। গ্রেপ্তার উত্তম প্রায় ১৫ বছর ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তার সহযোগী গ্রেপ্তার আলী ও ফারুকসহ রাজধানীর আশকোনা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় অবস্থান করে এ সব কার্যক্রম
'টিকিট কালোবাজারি সিন্ডিকেটে জড়িত রেল কর্মচারীরাই'
পরিচালনা করে থাকেন। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং এই বিষয়টি কাজে লাগিয়ে রেলস্টেশন এলাকায় সবসময় অবস্থান করে টিকিট কালোবাজারি চক্র গড়ে তোলেন। গ্রেপ্তার বাকিরা দেশের বিভিন্ন রুট সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন, যার ফলে তারা সেসব রুটের যাত্রীদের ম্যানেজ করে টিকিট বিক্রি করতেন। র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা এই কালোবাজারির বিষয়ে বেশকিছু তথ্য পেয়েছি, যারা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত এমন কিছু নামও পেয়েছি। তাদের বিষয়ে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাবো। প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।কাউন্টারম্যান, সহজ ডটকমের কর্মচারীসহ বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। এমনকি স্টেশনে যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত এমন কয়েকজনেরও এই সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।